Tuesday 27 April 2010

বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

হাকিমপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি | তারিখ: ২৭-০৪-২০১০


দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার দাউদপুর সীমান্তের ওপারে বিএসএফের গুলিতে শহিদুল ইসলাম (২০) নামের এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। তাঁর বাড়ি উপজেলার উত্তর দাউদ গ্রামে। তাঁর লাশ বিএসএফের হেফাজতে রয়েছে। দাউদপুর ক্যাম্পের বিডিআরের নায়েব সুবেদার আবদুল মতিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভারত থেকে গরু নিয়ে আসার পথে বিএসএফ শহিদুলকে গুলি করে।

Monday 26 April 2010

বাংলাদেশিকে অপহরণ করেছে বিএসএফ

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি | তারিখ: ২৫-০৪-২০১০

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার বাড়াদী সীমান্ত থেকে শাহীন আলম (১৮) নামে একজন বাংলাদেশি নাগরিককে অপহরণ করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল শনিবার সকাল সাতটার দিকে সীমান্তসংলগ্ন মাঠে গরু চরাতে গেলে ভারতের গেদে বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

এর কিছুক্ষণ পরে সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে শুভংকর (২৫) নামে ভারতীয় এক যুবককে আটক করে বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) জওয়ানেরা। এ দুটি ঘটনার পর সীমান্তে বিডিআর-বিএসএফ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চুয়াডাঙ্গা ৩৫ রাইফেল ব্যাটালিয়নের সেকেন্ড ইন কমান্ড হুমায়ুন কবির বলেন, বাংলাদেশি নাগরিককে অপহরণের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ও অপহূত শাহীনকে ফেরত চেয়ে বিএসএফকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

Sunday 4 April 2010

সাতক্ষীরায় পতাকা বৈঠক : আলোচনা ছাড়া সীমান্তে খাল খনন করবে না বিএসএফ



নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা | তারিখ: ০৪-০৪-২০১০


ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) আশ্বাস দিয়েছে, আলোচনা ছাড়া দুই দেশের নো-ম্যান্স-ল্যান্ডে খাল খননসহ কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করবে না। আশ্বাস দিয়েছে, সীমান্তে গুলি করে হত্যা করবে না কোনো বাংলাদেশিকে। গতকাল শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বলদঘাটা জিরো পয়েন্টে বিডিআর ও বিএসএফের মধ্যে ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে এ আশ্বাস দেওয়া হয়।

সাতক্ষীরার ৪১ রাইফেল ব্যাটালিয়নের বৈকারী ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার ওমর ফারুক জানান, গত শুক্রবার সকালে বৈকারী সীমান্তে কালিয়ানী নো-ম্যান্স-ল্যান্ডে বিএসএফের সদস্যরা খাল খনন করেন। বিডিআরের বাধার মুখে একপর্যায়ে তাঁরা খনন বন্ধ করতে বাধ্য হন। এর আগে শুক্রবার ভোরে বিএসএফের সদস্যরা সদর উপজেলার ঘোনা গ্রামের মো. সাইফুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করেন। এসব ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে বিডিআরের পক্ষ থেকে ভারতের ৯৪ বিএসএফ ব্যাটালিয়নে চিঠি পাঠানো হয়। এ চিঠিতে সাড়া দিয়ে গতকাল দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিডিআর ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়।

সোয়া এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বিডিআরের পক্ষে সাতক্ষীরা ৪১ রাইফেল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ইকবাল আজিমের নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন উপ-অধিনায়ক মেজর শামিম রেজা, ক্যাপ্টেন মাহবুব আলী, সুবেদার আকবর ও নায়েব সুবেদার ওমর ফারুক। বিএসএফের পক্ষে ৯৪ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট আনন্দ সিংয়ের নেতৃত্বে ছিলেন কৈজুরী ক্যাম্পের পরিদর্শক এস কে শর্মা, গোবরদা ক্যাম্পের কমান্ডার করণী পাল।

বিডিআরের কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানান, পতাকা বৈঠকে বিডিআরের পক্ষ থেকে কালিয়ানী নো-ম্যান্স-ল্যান্ডে জোর করে খাল খনন এবং কোনো কারণ ছাড়াই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যার কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। বিএসএফ গুলি করে বাংলাদেশিকে হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করে। তবে তারা আশ্বাস দেয়, ভবিষ্যতে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটবে না। তারা জানায়, আলোচনা ছাড়া দুই দেশের নো-ম্যান্স-ল্যান্ডের মধ্যে খাল খননসহ কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করবে না।

বৈঠকে উভয় পক্ষ চোরাচালানি ও মাদক পাচার রোধে একসঙ্গে কাজ করা এবং সীমান্তে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখার ব্যাপারে আলোচনা করে।

Saturday 3 April 2010

সাতক্ষীরা সীমান্তে বিএসএফের খাল খনন, পরে বন্ধ

বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা


নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা | তারিখ: ০৩-০৪-২০১০


ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা গতকাল শুক্রবার সকালে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে সাতক্ষীরার বৈকারী সীমান্তের নো-ম্যান্স-ল্যান্ডে খাল খনন করেন। একপর্যায়ে বিডিআর সদস্যদের বাধার মুখে খনন বন্ধ করতে বাধ্য হয় বিএসএফ।

এর আগে একই সীমান্তে সদর উপজেলার বলদঘাটা গ্রামে গতকাল ভোরে সাইফুল্লাহ গাইন (৩০) নামের এক বাংলাদেশি গরু রাখালের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। স্থানীয় বিডিআর সদস্যরা জানান, ওপারে বশিরহাটের গোবরদা এলাকায় বিএসএফ সদস্যরা সাইফুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করেন। পরে বিএসএফ তাঁর লাশ বাংলাদেশ সীমান্তের ভেতরে রেখে যায়।

নিহত সাইফুল্লাহ সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘোনা গ্রামের আবদুল সাত্তার গাইনের ছেলে।

জানতে চাইলে বিডিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মইনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিজের দেশে বাংলাদেশিকে হত্যার পর বিএসএফ তাঁর (সাইফুল্লাহ) মৃতদেহ বাংলাদেশে ফেলে গেছে। এটা খুবই দুঃখজনক।’ তিনি বলেন, এ ব্যাপারে বিডিআরের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে বিএসএফকে জানানো হবে।

বৈকারী সীমান্তের গ্রামবাসী ও বিডিআর সূত্র জানায়, শতাধিক বিএসএফ সদস্য ও ভারতের দুই শতাধিক শ্রমিক সকাল সাড়ে আটটার দিকে সীমান্তের কালিয়ানী এলাকায় যায়। তারা মেইন পিলার ৮-এর সাব-পিলার ২৭-এর পাশের নো-ম্যান্স-ল্যান্ডে শুকিয়ে যাওয়া ডুরার খাল কাটা শুরু করে। বিষয়টি দেখে সদর উপজেলার বৈকারী ক্যাম্পের বিডিআর সদস্যরা বিএসএফের কাছে আপত্তি জানান। কিন্তু বিএসএফ সদস্যরা খাল থেকে মাটি কাটা অব্যাহত রাখেন। সকাল নয়টার দিকে বিডিআর সদস্যরা আলোচনার জন্য পতাকা বৈঠকের আহ্বান করে ভারতের বসিরহাট মহকুমার কৈজুরী বিএসএফ ক্যাম্পে বার্তা পাঠান। বিএসএফ সদস্যরা তাতেও সাড়া দেননি। এর আধঘণ্টা পর বিডিআর সদস্যদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সতর্ক করে লাল পতাকা তোলা হয়। বিএসএফ সদস্যরা তখন মাটি কাটা বন্ধ করে ওই স্থানে অবস্থান নেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএসএফ সদস্যরা মাটি কাটা শ্রমিকদের নিয়ে স্থান ত্যাগ করেন। পরে বিডিআর সদস্যরা লাল পতাকা নিয়ে ক্যাম্পে ফিরে আসেন। এ ঘটনায় সীমান্তের গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সাইফুল্লাহর লাশ উদ্ধার প্রসঙ্গে বৈকারী গ্রামের গ্রামপুলিশ মো. গয়েছউদ্দিন জানান, ভোর চারটার দিকে সীমান্তে একটি গুলির শব্দ শোনা যায়। এর আধঘণ্টা পর বলদঘাটা গ্রামের নছর আলী চৌকিদারের পুকুর পাড়ে সাইফুল্লাহর লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। গয়েছউদ্দিনের ধারণা, বিএসএফ সদস্যরা সাইফুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করলে তাঁর সঙ্গীরা লাশ ভারত থেকে বাংলাদেশে এনেছে।

সাইফুল্লাহর স্ত্রী রাশিদা খাতুন জানান, তাঁর স্বামী গত বুধবার গরু আনতে ভারতে যান।

সাতক্ষীরা ৪১ রাইফেল ব্যাটালিয়নের বৈকারী ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার ওমর হোসেন দুটি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিডিআর সদস্যদের সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। সরকারি পর্যায়ে আলোচনা ছাড়া কোনো অবস্থায় বেআইনিভাবে খাল থেকে মাটি কাটতে দেওয়া হবে না।

বিডিআর কর্মকর্তা দাবি করেন, খাল কাটার জন্য বিডিআর সদস্যদের নজর অন্যদিকে রাখতে সাইফুল্লাহকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন বিএসএফ সদস্যরা।

সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আসাদুজ্জামান জানান, সাইফুল্লাহর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর পেটে গুলি লেগেছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ তাঁর স্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।