নিজস্ব প্রতিবেদক | তারিখ: ১৩-০২-২০১১
বাংলাদেশ সফরে আসা ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কলিন গনসালভেজ বলেছেন, বাংলাদেশের সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তথ্য ও পরিসংখ্যান পেলে তিনি সে দেশের আদালতে জনস্বার্থে মামলা করবেন। তিনি মনে করেন, জনস্বার্থে মামলা করলে মানুষের অধিকার নিশ্চিত হবে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আইনি সহায়তাদানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) আয়োজিত ‘অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার এবং জনস্বার্থ মামলা’ বিষয়ে জনবক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন কলিন গনসালভেজ।
অন্যদিকে আলোচনা সভায় বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী হত্যার ঘটনায় ভারতের মানবাধিকার কমিশন বা আইনজীবীদের ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল।
কলিন গনসালভেজ বলেন, বাংলাদেশের সীমান্তে বিএসএফ যা করছে, সেটা নৃশংসতা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভারতীয় গণমাধ্যমে এর কিছুই প্রকাশিত হয় না। দেশটির মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এ নিয়ে চিন্তিত নয়। তিনি বলেন, ‘ভারতে অনেকেই বাংলাদেশিদের অপরাধী হিসেবে মনে করে। এটা চলতে পারে না। আমরা পর্যাপ্ত তথ্য ও পরিসংখ্যান পেলে ভারতীয় উচ্চ আদালতে এ নিয়ে জনস্বার্থে মামলা করব। সেখানে আমরা দুই দেশের আইনজীবীদের নিয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলনও করব।’
এর আগে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় কলিন গনসালভেজ বলেন, জনস্বার্থে মামলার কারণে সাধারণ মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা সহজ হয়। তিনি কয়েকটি উদাহরণ দেন। তিনি বলেন, ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে মানুষের খাদ্যের অধিকার নিয়ে একটি মামলা হয়েছিল। এরপর আদালতের নির্দেশে ভারতে ৩৫ কোটি শিক্ষার্থীর দুপুরের খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকার বাধ্য হয়েছে। একই ভাবে স্বাস্থ্য ও শিক্ষার অধিকারও নিশ্চিত করা যায়।
কলিন গনসালভেজ বলেন, মানবাধিকারের বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের আইনজীবীরা একসঙ্গে কাজ করতে পারেন। ভারতের কারাগারে অনেক বাংলাদেশি ও বাংলাদেশের কারাগারে অনেক ভারতীয় বন্দী রয়েছে। এদের মুক্ত করার ব্যাপারে উভয় দেশের আইনজীবীরা একসঙ্গে কাজ করতে পারেন। তিনি একটি উদাহরণও দেন। সম্প্রতি পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট সে দেশে আটক ৪০০ ভারতীয়কে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন। ভারতের সুপ্রিম কোর্টও দেশটিতে বন্দী অনেক পাকিস্তানিকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন।
ফেলানী হত্যার বিষয় উল্লেখ করে মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, এ বিষয়ে ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন হস্তক্ষেপ করবে। কিন্তু তারা তা করেনি। সে দেশের আইনজীবীরা বিষয়টি নিয়ে আদালতে জনস্বার্থে মামলাও করতে পারতেন, সেটাও হয়নি।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশে জনস্বার্থে অনেক মামলা হচ্ছে। উচ্চ আদালত বেশ কিছু নির্দেশও দিয়েছেন। তবে সরকার আদালতের রায় বাস্তবায়নে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রেই মন্ত্রীরা চেষ্টা করছেন যেন এই রায় বাস্তবায়ন না হয়।
No comments:
Post a Comment