Wed, Mar 9th, 2011 7:49 pm BdST
নয়া দিল্লি প্রতিনিধি
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
নয়া দিল্লি, মার্চ০৯ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর বার্ষিক বৈঠকের আলোচনায় দুই মাস আগে সীমান্তে ফেলানি হত্যা ইস্যুটি প্রাধান্য পেতে পারে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিএসএফ এর শীর্ষ কর্মকর্তারা ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে বুধবার তাদের বার্ষিক এই সমন্বয় বৈঠক শুরু করেছেন।
এতে ২০ সদস্যের বিজিবি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এর প্রধান মেজর জেনারেল মো. রফিকুল ইসলাম। বিএসএফ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন রমন শ্রীবাস্তব।
এই সীমান্ত সম্মেলন রোববার শেষ হওয়ার কথা।
অবশ্য শনিবার 'জয়েন্ট রেকর্ড অব ডিসকাশন' স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিজিবি দুদেশের সীমান্তে সংযম প্রদর্শনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করবে। অন্যদিকে বিএসএফ অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপার না করতে দুদেশের সীমান্তবর্তী জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির সুপারিশ করতে পারে।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, বৈঠকে সন্ত্রাসী ও অন্যান্য অপরাধীদের আন্তঃসীমান্ত চলাচল, সীমান্তপথে অবৈধ অনুপ্রবেশ, নারী ও শিশু পাচার রোধে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর সহযোগিতা চাওয়ার বিষয়ে বিএসএফ জোর দেবে। উভয় পক্ষ যৌথ সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা করবে।
বিএসএফ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের যেখানে জিরো লাইন থেকে দেড়শ' মিটার দূরত্বে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রে জিরো লাইন বরাবর কিছু স্থানে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের ব্যাপারে বিজিবির মতামত জানতে চাইতে পারে।
গত ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্ত পার হয়ে দেশে ফেরার সময় কাঁটাতারের বেড়ায় কাপড় আটকে গেলে ফেলানী চিৎকার শুরু করে। তখন বিএসএফ সদস্যরা তাকে গুলি করে হত্যা করে এবং লাশ নিয়ে যায়।
পরদিন বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে লাশ ফেরত দেয় বিএসএফ।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বানারভিটা গ্রামের নূর ইসলাম নূরু পরিবার পরিজন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভারতের আসাম রাজ্যে বনগাইগাঁও টুনিয়াপাড়া বস্তিতে থাকতেন। তার তিন মেয়ে ও তিন ছেলের মধ্যে ফেলানী ছিল সবার বড়।
ফেলানীকে বিয়ে দিতেই তাকে নিয়ে কুড়িগ্রামে ফিরছিলেন তিনি। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ফেলানীর বিয়ের অনুষ্ঠান ছিলো।
ফেলানির ঘটনায় ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনার রাজীত মিত্রকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে ওই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ।
গত ১৮ জানুয়ারি ঢাকায় ভারতীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোপাল কে পিল্লাইয়ের সঙ্গে বৈঠকেও এ ইস্যুটি তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্র সচিব আব্দুস সোবহান সিকদার। পিল্লাই ফেলানি হত্যার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে তিনি এও বলেন যে, অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপার না করতে লোকদের সচেতন করা উচিত বাংলাদেশের।
মানবাধিকার সংগঠন 'অধিকার' এর এক রিপোর্টে বলা হয়, গত এক বছরে সীমান্তে বিএসএফ এর গুলিতে ৭৪ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। আহত হয় আরো ৭২ জন।
২০১০ সালের ডিসেম্বরে নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ 'ট্রিগার হ্যাপি' শিরোনামে এক রিপোর্ট প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফ মানুষ হত্যা করছে এবং তাদের এ অপরাধের কোনো বিচার হচ্ছে না। গত ১০ বছরে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তে ৯শ'রও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
দুদেশের মধ্যে ৪,০২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তের ২২১৬ দশমিক ৭ কিলোমিটারই হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/এইচএ/২১০০ ঘ.
"ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, বৈঠকে সন্ত্রাসী ও অন্যান্য অপরাধীদের আন্তঃসীমান্ত চলাচল, সীমান্তপথে অবৈধ অনুপ্রবেশ, নারী ও শিশু পাচার রোধে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর সহযোগিতা চাওয়ার বিষয়ে বিএসএফ জোর দেবে। উভয় পক্ষ যৌথ সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা করবে।"
ReplyDeleteবাংলাদেশেরও উচিৎ সীমান্তের আশেপাশে ভারতে যে সকল ফেন্সিডিল ও নানা মাদকের কারখানা গড়ে উঠেছে সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভারতকে বলা। শর্ত কেবল ভারতই দিবে, আবার বাংলাদেশীরাই টপাটপ মারা পড়বে, এমন আর কতো দিন চলবে?