Thursday 13 June 2013

সীমান্তে হত্যা ‘শূন্যে’ নেমেছে: পঙ্কজ (ভারতের হাইকমিশনার)


জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক,  বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 2013-06-12 11:11:04.0 GMT Updated: 2013-06-12 12:42:35.0 GMT

এই বছরের শুরু থেকে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সীমান্তে কোনো বাংলাদেশি বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়নি বলে দাবি করেছেন ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ সরণ।

বুধবার তার এই বক্তব্যের ২৪ ঘণ্টা আগেই যশোর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হন।

বছরের শুরু থেকে কোনো বাংলাদেশি সীমান্তে নিহত হননি বলে নয়া দিল্লির দূত দাবি করলেও জানুয়ারি মাসেই অন্তত দুই বাংলাদেশি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন।

জানুয়ারি মাসে ওই দুজন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। ফেব্রুয়ারি মাসে কুড়িগ্রাম সীমান্তে নিহত হন আরেকজন।

এসবের মধ্যেই পঙ্কজ সরণ জাতীয় প্রেসক্লাবে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বলেন, জানুয়ারি থেকে গত সপ্তাহ পর্যন্ত সীমান্তে হত্যা ‘শূন্যের’ কোটায় নেমে এসেছে।

যশোরে সোমবার রাতে দুজন নিহতের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি নয়াদিল্লির সঙ্গে আলোচনার আগে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

বিএসএফের হত্যাকাণ্ড বন্ধে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সমালোচনার মধ্যে থাকা ভারতের রাষ্ট্রদূত সীমান্ত ব্যবস্থাপনাকে বড় ধরনের ‘চ্যালেঞ্জ’ বলে অভিহিত করেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতাও চান তিনি।

অনুষ্ঠানে টিপাইমুখ প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয়েও কথা বলেন পঙ্কজ সরণ।

তিনি বলেন, বরাক নদীতে টিপাইমুখ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র করার যে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে তাতে বাংলাদেশকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চাইলে বাংলাদেশও সেখান থেকে বিদ্যুৎ নিতে পারবে।

“এই প্রকল্পে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ভারতের কাছ থেকে আনতে পারবে বাংলাদেশ। অন্যদিকে টিপাইমুখ নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগ রয়েছে। এই দুটি বিষয় মাথায় রেখেই আমাদের এগোতে হবে।”

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, গত চার বছরে সম্মিলিতভাবে যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তার ফলে দুই সম্পর্ক একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ছয়টি ক্ষেত্র- রাজনীতি ও নিরাপত্তা, উন্নয়ন সহযোগিতা, বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগ, পানি বণ্টন, আঞ্চলিক যোগাযোগ এবং দুই দেশের জনগণ পর্যায়ে যোগাযোগ-প্রতিটি ক্ষেত্র নিয়েই কথা বলেন পঙ্কজ সরণ।

ইতিহাসের আলোকে তিনি বলেন, এই দুই দেশ একে অন্যের ক্ষতি না করে সর্বোচ্চ লাভবান হতে পারে।

“সর্বোচ্চ লাভবান হওয়ার জন্য একযোগে কাজ করলে আমরা উভয়ই সুবিধা পেতে পারি।”

ভারত সব সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল জানিয়ে তিনি বলেন, “সহযোগিতার অর্থ এই নয় যে, আমরা নিজেদের সার্বভৌমত্ব হারাচ্ছি।”

গত চার বছরে হাসিনা-মনমোহন সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের উভয় দেশ সফরের কথা তুলে ধরেন পঙ্কজ। ভারতের প্রতিশ্রুত ১০০ কোটি ডলার ঋণ ছাড় হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

হাইকমিশনার বলেন, এর আওতায় ৭৯৪ মিলিয়ন ডলারের ১৬টি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এর বাইরে ২০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেয়া হয়েছে, যা ইচ্ছেমতো যে কোনো প্রকল্পে ব্যবহার করতে পারে বাংলাদেশ।

ভারতের অনুদানের ওই অর্থ পদ্মা সেতু প্রকল্পে ব্যবহার করা হবে বলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছেন।

হাইকমিশনার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারো ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে সফরের দিন-ক্ষণ এখনো ঠিক হয়নি।

তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সই এবং স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুসমর্থনে ভারত সরকারের প্রতিশ্রুতির কথা আবারো তুলে ধরেন তিনি।

১৯৭৪ সালের স্থল সীমান্ত চুক্তি এবং এর আলোকে ২০১১ সালে সই হওয়া প্রটোকল অনুসমর্থনের জন্য মতৈক্য তৈরিতে ভারত সরকার কাজ করছে বলে জানান তিনি।

http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article635756.bdnews

No comments:

Post a Comment