কুড়িগ্রাম, জানুয়ারি ০৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- সীমান্তে কাঁটাতারে আটকেপড়া বাংলাদেশি এক কিশোরীকে গুলি চালিয়ে হত্যার পর লাশ নিয়ে গেছে ভারতের সীমান্ত রক্ষীরা।
মানবাধিকার সংগঠনের হিসেবে সীমান্তে গত বছর ৭৪ বাংলাদেশি নিহত হওয়ার পর নতুন বছরের শুরুতেই শুক্রবার কুড়িগ্রাম সীমান্তে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হলো। লাশ ফেরত চেয়ে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী- বিএসএফকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে বিডিআর জানিয়েছে।
পুলিশ ও বিডিআর জানিয়েছে, ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ফেলানী (১৫) নামে ওই কিশোরীকে হত্যা করা হয়।
ফেলানী নাগেশ্বরী উপজেলার দক্ষিণ রামখানা ইউনিয়নের বানার ভিটা গ্রামের নুরুল ইসলাম নূরুর মেয়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, নূরু ভারতের দিল্লিতে কাজ করেন। তার সঙ্গে সেখানে থাকতেন ফেলানী। দেশে বিয়ে ঠিক হওয়ায় বাবার সঙ্গে ফেরার পথে বিএসএফের হামলার শিকার হয় সে।
বিডিআরের ফুলবাড়ীর কোম্পানি কমান্ডার নায়েক সুবেদার আব্দুল জব্বার সাংবাদিকদের জানান, ফেলানী অনন্তপুর সীমান্তের ৯৪৭ আন্তর্জাতিক সীমানা পিলারের ৩ ও ৪ এস পিলারের কাছ দিয়ে ভারত থেকে দেশে ফেরার সময় বিএসএফের চৌধুরী হাট ক্যাম্পের সদস্যরা তার ওপর গুলি চালায়।
তিনি বলেন, "এতে ঘটনাস্থলে ফেলানীর মৃত্যু হয়। পরে তার লাশ ভারতে নিয়ে যায় বিএসএফ সদস্যরা।"
এ ঘটনার পর সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
স্থানীয়দের উদ্ধৃতি দিয়ে ফুলবাড়ী থানার ওসি মোনায়েম সরকার সাংবাদিকদের বলেন, মেয়েকে নিয়ে সীমান্ত দিয়ে ফিরছিলেন নূরু।
"ফেলানীর বাবা প্রথমে মই দিয়ে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে দেশে ঢুকে পড়েন। তবে পার হওয়ার সময় কাঁটাতারে ফেলানীর জামা-কাপড় আটকে যায়। এ সময় ভয়ে সে চিৎকার শুরু করে। তখন বিএসএফ সদস্যরা তাকে লক্ষ করে গুলি চালায়", বলেন তিনি।
ধারণা করা হচ্ছে, নূরু অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিচ্ছিলেন।
বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন অধিকার'র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১০ সালে বিএসএফ ৭৪ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করে। একই সময়ে বিএসএফের গুলি ও নির্যাতনে আহত হন ৭২ জন, অপহৃতের সংখ্যা ৪৩।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউমেন রাইটস ওয়াচ গত ডিসেম্বরে এক প্রতিবেদনে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি হত্যার প্রতিবাদ জানায়। এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী সীমান্ত রক্ষীদের বিচার করতেও নয়া দিল্লির প্রতি আহ্বান জানায় তারা।
No comments:
Post a Comment