সাতক্ষীরা সংবাদদাতা:
সাতক্ষীরার কেড়াগাছী সীমান্তে গুলিবর্ষণের পর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা গুলিবিদ্ধ দুই বাংলাদেশিকে অপহরণ করেছে। অপহূত দুই বাংলাদেশি হলেন— সাতক্ষীরার সদর উপজেলার হাওলখালী গ্রামের আনারুল ইসলামের ছেলে শরিফুল ইসলাম (২৬) ও একই গ্রামের আবদুল মাজেদের ছেলে রুহুল কুদ্দুস সরদার (৩৭)। তবে এ ঘটনার পর বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে একজনকে আটকের কথা স্বীকার করেছে বিএসএফ।
সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাতে ২০-৩৫ জনের একদল বাংলাদেশি রাখাল গরু আনতে ভারতে যায়। বুধবার ভোররাতে গরু নিয়ে ফেরার পথে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালী সীমান্তের বিপরীতে ভারতের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার স্বরূপনগর থানার খলিসা ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে তিন রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। এতে শরিফুল ও কুদ্দুস নামে দু’জন গুলিবিদ্ধ হন। পরে বিএসএফ সদস্যরা আহত অবস্থায় তাদের ধরে নিয়ে যায়।
কুশখালী বিওপির কমান্ডার সুবেদার সুলতান আহমদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ঘটনায় উভয় দেশের ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে শুরু হয়ে ১টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির নেতৃত্ব দেন সাতক্ষীরা ৩৮ বর্ডার গার্ডের অধিনায়ক লে. কর্নেল আবু বাছির। অন্যদিকে বিএসএফের নেতৃত্ব দেন ভারতের ১৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক হারমিথ সিং। বৈঠকে বিএসএফের পক্ষে জানানো হয়, তারা এক বাংলাদেশিকে আটক করেছে। আটক বাংলাদেশি রুহুল কুদ্দুসকে ভারতীয় চোরাচালান আইনে ও অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে স্বরূপনগর থানায় মামলা হয়েছে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তার অনুপ্রবেশের ঘটনায় বিএসএফের দুঃখ প্রকাশ :
শেরপুরের নালিতাবাড়ী সীমান্ত দিয়ে গত রোববার বিএসএফের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের ঘটনায় বিএসএফ দুঃখ প্রকাশ করেছে। শেরপুর প্রতিনিধি জানান, গতকাল নালিতাবাড়ী নাকুগাঁও স্থলবন্দর সংলগ্ন নো-ম্যানস ল্যান্ডে বিজিবি-বিএসএফ উচ্চ পর্যায়ের এক পতাকা বৈঠকে বিএসএফ জানিয়েছে, বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে এবং ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে তারা সতর্ক থাকবে। বেলা ১১টায় শুরু হয়ে প্রায় দু’ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন ময়মনসিংহ বিজিবির ২৭ ব্যাটালিয়নের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. নজরুল ইসলাম। অন্যদিকে বিএসএফের পক্ষে নেতৃত্ব দেন শিলং ফ্রন্টইয়ার (তুরা, আসাম ও শিলং-এই তিন সেক্টরের প্রধান) হেড কোয়ার্টারের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) সুদেশ কুমার। বৈঠকে ২৭ বিজিবির অন্য কর্মকর্তাদের মধ্যে কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল হ্লা হাং ম্রং, লে. কর্নেল আবদুল খবির সরকার, কমান্ডার মেজর মো. খালেদ, মেজর খন্দকার আবু হুরাইয়া (জিএসও), মেজর নাজমুল হুদা ও স্টাফ অফিসার সাহেদ মেহের উপস্থিত ছিলেন।
বিএসএফের পক্ষে ছিলেন ডিআইজি রবি গান্ধী, তুরা সেক্টর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার (অব) ভিকো চান, কমান্ডিং অফিসার অমর কুমার এক্কা, স্টাফ অফিসার বিকাশ কুমার সিং ও অসেম ইউনো। বৈঠক শেষে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. নজরুল ইসলাম জানান, উভয় দেশের মধ্যে খুবই ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে বিএসএফের পক্ষ থেকে সীমান্তে মানুষ হত্যা, চোরাচালান ও মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধ রোধকল্পে সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকানোসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
http://www.shokalerkhabor.com/online/details_news.php?id=66803&&%20page_id=%2045
No comments:
Post a Comment